সালথায় গ্রাম্য দলাদলির জেরে কৃষককে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের সালথায় গ্রাম্য দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বকুল মোল্যা নামে এক কৃষকের উপর হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে সে গুরুত্বর আহত অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় মহিলাসহ আরো অন্তত ১২জন আহত হয়েছে । বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের তুগুলদিয়া গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের সমর্থক মুন্নু মোল্লা গং ও সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার সাজ্জাদ হোসেনের সমর্থক আতিক মাতুব্বর গংদের মধ্যে এই হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুত্বর আহত বকুল মোল্যা আনোয়ার হোসেনের সমর্থক ও তুগুলদিয়া গ্রামের মৃত জলিল মোল্লার পুত্র। সাজ্জাদ হোসেন এলাকায় গ্রাম্য রাজনীতি শুরু করার পর থেকেই সংঘর্ষ হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে, কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন।
জানা যায়, আতিক মাতুব্বরের সাথে মুন্নু মোল্যার গ্রাম্য দলাদলি চলে আসছিলো। আতিক মাতুব্বর বিভিন্ন সময়ে মুন্নু মোল্যাসহ স্থানীয়দের দলে ভেড়াতে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। ঘটনার দিন মুন্নু মোল্যার ছেলে লালচান গোসল করতে গেলে আতিকের লোকজন বাঁধা সৃষ্টি করে, এক পর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করে। পরবর্তীতে লালচানের চিৎকার শুনে বকুল মোল্যা, হারেচ মোল্যাসহ অন্যান্যরা এগিয়ে যায়।
এসময় বকুল মোল্যাকে ধারালো অস্ত্র রামদা ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে ধাওয়া দেয় তারা। বকুল মোল্যা অসুস্থ ও রোজা থাকায় মাটিতে পড়ে যায়। এরপর আতিক মাতুব্বর, তার ছেলে তাহের মাতুব্বর, খায়ের মাতুব্বর, ভাই ইকরামসহ ১৫/১৬ জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান হাত ও দুই পা কুুঁপিয়ে মারাত্মক জখম করে এবং ডান হাত ভেঙে ফেলে। পরে বকুল মোল্যাকে পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়। এ সময় হারেজ সহ আরো দুজনকে ফরিদপুর মেডিকলে নেয়া হয়।
বকুল মোল্যার ছেলে তুহিন বলেন, কয়েকদিন যাবৎ আতিকরা তাদের দলে মেশার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে আমাদের হয়রানি করছে এবং দলে না মিশলে তারা আমাদের কাছে টাকা দাবি করে। সেই টাকা না দেয়ায় আমার আব্বাকে অমানসিকভাবে কুঁপিয়েছে ওরা। আমি ওদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি। বকুলের স্ত্রী জবেদা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে খুবই ভয়ংকরভাবে কুপিয়েছে। মানুষ মানুষকে এভাবে কোপায় কিভাবে? পুলিশ তাৎক্ষনিক না থাকলে ওরা আমার স্বামীকে মেরেই ফেলতো। আমি জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে জানতে আতিক মাতুব্বরের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায় নাই। গ্রাম্য মোড়ল সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন জানান, ওরা আমার কোনো কর্মী না। ওদের সাথে আজ পর্যন্ত আমি বসি নাই, অনেককে চিনিওনা। তারা কিভাবে আমার কর্মী হয়। আমি চাই এলাকায় শান্তি নিশ্চিত হোক। এ বিষয়ে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ সাদিক বলেন, ঘটনাটি নিয়ে এজাহার পেয়েছি। এটি মামলায় রুপান্তর হবে এবং আসামীদের গ্রেপ্তারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।