সমাজ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে এ যুগের মানবতার আরেক নাম শ্যামল সাহা
1 min readআলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর প্রতিনিধি):
মানবতার সেবা আর মানুষ নিয়ে চিন্তা করা এখনকার সমাজে খুব কম মানুষের মধ্যেই দেখা যায়। মানুষ ছুটে স্বার্থ আর লাভের আশায়। মানুষের উপকার করা, মানুষকে ভালোবাসা, সহযোগিতা করার মনোভাব খুব একটা চোখে পড়ে না।
সমাজ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে এখনও নীরবে নিভৃতে কিছু মানুষ কাজ করে থাকেন। আত্মপ্রচার নয়, আত্মতৃপ্তিই যাদের মূল উদ্দেশ্য। মানবতার কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া এমন একটি ব্যক্তির নাম শ্যামল সাহা।
শ্যামল সাহা ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের শিরগ্রামের সাহা পরিবারে ১৯৫১খ্রিঃ জন্মগ্রহণ করেন। পিতা স্বর্গীয় রাজমোহন সাহা ও মাতা স্বর্গীয় সুধা রাণী সাহা।
শ্যামল সাহা শৈশবকাল থেকে অভাব অনাটনের মধ্য দিয়ে এক পর্যায় সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় বৃত্তমান ব্যক্তি হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
১৯৭০ খ্রিঃ গাঁয়ের স্কুল শিরগ্রাম বহূমূখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন তিনি। পরে অভাব অনটনের কারণে সংসারে হাল ধরতে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে পারেননি। তবে তিনি যথেষ্ট জ্ঞানের অধিকারী।
তার জীবন যুদ্ধ কাহিনি বড়ই সংগ্রামের। তিনি তার এলাকার কখনও পাঁচ মাইল কিংবা কখনও ৮-১০ মাইল পায়ে হেঁটে বিভিন্ন পর্যায়ক্রমে ক্ষুদ্র ব্যবসা হাট-বাজারে করেছেন।
পরিশ্রম সৌভাগ্যের পরিসূতি এ চিরন্তন বাক্য তার জীবনে সাফল্যের চাবিকাঠী অর্জন করেছে।
তিনি প্রথমে ছোটখাটভাবে ঠিকাদারী ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীতে শ্যামল বিড়ি পরিচালক হিসেবে অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য লাভ করলে। এ ব্যবসাও ছেড়ে তিনি বোয়ালমারীতে রাজ ব্রীক নামে একটি ইটভাটা স্থাপন করেন। এভাবে তিনি ধনী হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। বতর্মানে তিনি বোয়ালমারী পৌর এলাকার ৩ নং ওয়ার্ডে বসবাস করছেন।
ধনী হওয়ার পর অতীত স্মৃতির ব্যাপারে অনেকে উদাসীন। কিন্তু শ্যামল সাহা অতীতকে বুকে লালন ও ধারণ করে অসহায় নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পাশে থেকে নিজেকে সর্বদা বিলিয়ে দিচ্ছে।
‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’- সেই সেবার ব্রত নিয়ে তিনি মানুষের কল্যাণে নিবেদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ‘সবার সুখে হাসব আমি, কাঁদব সবার দুঃখে, নিজের খাবার বিলিয়ে দিব অনাহারীর মুখে’ পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের সবার সুখে কবিতার সার্থকতা সমাজের বৃত্তবান অধিকাংশ ব্যক্তিরা অনেকটায় উদাসীন। তবে এ ধনাঢ্য ব্যক্তি শ্যামল সাহার মধ্যে কবির কবিতার সুর মিলিয়ে বাস্তবে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি, মানুষ পেতে পারে না…ও বন্ধু’ ভূপেন হাজারিকার এই জীবন্ত গান তার জীবনে বাস্তবে ফুটে ওঠেছে।
যুব সমাজকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন খেলাধুলা সামগ্রী, গরিব শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ, নানা ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় কর্মকান্ডে আর্থিক সহায়তা, অসহায় মানুষের সার্বিক সহযোগিতা সর্বদা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।
শিরগ্রাম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মানবেন্দ্রনাথ সাহা টলিন বলেন, শ্যামল দাদা এ যুগের মানবতার ফেরিওয়ালা। গ্রামের সকল সুখে-দুঃখে তাকে কাছে পাওয়া যায়।’
বানা ইউপি সদস্য রাজ ইসলাম খোকন বলেন, আমরা তার মানবিক কর্মকাণ্ড দেখে মুগ্ধ হই। বর্তমান সময়ে যেখানে সবকিছুতেই লোক দেখানো মানবসেবার একটা রীতি চলছে; সেখানে একজন মানুষ নিজেকে আড়ালে রেখে মহৎ কাজ করে যাচ্ছেন।
জানতে চাইলে শ্যামল সাহা বলেন, ‘সমাজের অসহায় মানুষদের সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ভালো কাজে সহযোগিতা করা আমার নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তিনি আরও বলেন, যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন জনগণের সেবক হিসেবে মানুষের সেবার নিয়োজিত থাকতে পারি; সবার কাছে এ আশির্বাদ কামনা করি।