নগরকান্দায় পিতা পুত্র, ও পুত্রবধূ মানবপাচার কারবারি, অসহায় ভাবে জীবনযাপন ভুক্তভোগীদের
![](https://sodeshtribune.com/wp-content/uploads/2023/01/received_1153608765318851-1024x954.jpeg)
বেলায়েত হোসেন লিটনঃ
ফরিদপুরের নগরকান্দায় পিতা পুত্র,পুত্রবধূ ও কন্যা মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য।
তাদের কারনে অনেক লোকে জীবন মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর্থিকভাবে একাধিক পরিবার। তেমনি উপজেলার মধ্যজগদিয়া গ্রামের মৃত গনি ফকিরের ছেলে কুদ্দুস ফকির ও তার ছেলে বাবুল ফকির মেয়ে সেলির তান্ডবে ।
এরকম ক্ষতিগ্রস্থরা হলেন একই গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে সজীব ব্যাপারী ও তাছলিমার স্বামী সুজন।
এব্যাপারে সুজনের স্ত্রী তাছলিমা বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
সজীবও সুজনকে সৌদি আরবের ভিসা দিয়ে সৌদি আরব নেওয়ার জন্য প্রায় ১০ মাস পূর্বে সৌদি প্রবাসী বাবুলের পক্ষে তার পিতা কুদ্দুস ফকির সজীবের পিতা মজিবরের নিকট থেকে মোট ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও সুজনের স্ত্রী তাছলিমার নিকট থেকে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা দুইজনের নিকট হতে সর্বমোট ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা গ্রহন করে কুদ্দুস ফকির ও তার মেয়ে সেলি এবং পুত্র বাবুলের স্ত্রী আসমা।
অতঃপর প্রায় ৯ মাস আগে ( টাকা গ্রহনের ১ মাস পরে ) দু’জনকে ভিসা পাঠিয়ে বাবুল সজিব ও সুজনকে কিছু দিনের ব্যাবধানে অথ্যাৎ সজিবকে ২৮ নভেম্বর ২০২১ ও সুজনকে ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ সৌদি আরব নেয়। সৌদি আরব যাওয়ার আগে বাবুলের সাথে চুক্তি হয় যে ( মোবাইলে কুদ্দুস ফকিরের উপস্থিতিতে ) সৌদি আরব নেয়ার পর সজীব ও সুজনকে ১৫ মাসের ফ্রি ভিসার আকামা করে দিবে এবং সজীবকে ড্রাইভারের কাজ দিবে ও সুজনকে রঙ এর কাজ দিবে মর্মে।
পরবর্তীতে উক্ত সজীব এবং সুজনকে সৌদি আরবে নেয়ার পর কথা অনুযায়ী ফ্রি ভিসার আকামা এমনকি ব্যক্তি মালিকানার আকামা কোনটাই করে দিতে পারে নাই বাবুল ফকির ।
সুজন এবং সজীব সৌদি আরবে বর্তমানে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করতেছে।
বৈধ কাগজপত্র ছাড়া তারা সর্বদা পলাতক জীবন যাপন করছে বলে ভুক্তভোগীদের পরিবার জানান।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিক দরবার শালিসের বৈঠক বসলেও কোন সুরাহা হয়নি।
যাহা পরবর্তীতে বিষয়টি স্থানীয় নগরকান্দা থানায় অভিযোগ হলে সংশ্লিষ্ট থানার এসআই মাসুদুর রহমান গত ০১/০৮/২০২২ তারিখে সন্ধ্যা ৭ টায় থানায় বসে উভয় পক্ষের কথা পর্যালোচনা করেন ।
পর্যালোচনার এক পর্যায়ে শালিসকারীদের মধ্যস্থতায় এবং বাবুল ফকিরের সাথে মোবাইলে কথা বলে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং সে মোতাবেক একটি অঙ্গীকার নামা প্রদানে সম্মতি হয়।
তাতে কয়েকটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যেমন শালিসের তারিখ হইতে আগামী ৩ মাসের মধ্যে কুদ্দুস ফকিরের ছেলে বাবুল ফকির সজীব ও সুজনকে ১ বছরের ফ্রি ভিসার আকামা করে দিবে, ৩ মাসের মধ্যে বাবুল ফকির সজীব ও সুজনের আকামা করে দিতে ব্যর্থ হলে ক্ষতিপূরণসহ সম্পূর্ণ টাকা সজীব ও সুজনের পরিবারের কাছে ফেরত দিতে বাধ্য থাকিবে।
সজীব ও সুজনকে দেশে পাঠানোর যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে বাবুল।
আকামা প্রদানের যে ৩ মাসের সময় দেয়া হয়েছে উক্ত সময়ে সজীব এবং সুজনের যাবতীয় দেখভাল , থাকা খাওয়া বাবুল ফকির বহন করবে ।
এ ৩ মাসের মধ্যে কোনরূপ পুলিশের ঝামেলা হলে তার দায় – দায়িত্বও বাবুল ফকির বহন করবে ।
বাবুল ফকির ৩ মাসের মধ্যে ১ বছরের আকামা সুন্দরভাবে প্রদান করার পর তার আর দায় – দায়িত্ব থাকবেনা অর্থাৎ ১ বছরের আকামা হাতে পাওয়ার পর সজীব এবং সুজন সম্পূর্ণ নিজ দায়িত্বে সৌদি আরব অবস্থান করবে ।
এ ক্ষেত্রে বাবুলের কোনরুপ দায় – দায়িত্ব থাকবেনা এবং কোন আপত্তিও চলবেনা।
সুজনের নিকট কুদ্দুস ফকির ৩০,০০০ টাকা পাবে মর্মে প্রতিয়মান হয় ।
উক্ত ৩০ হাজার টাকা সুজনকে ১ বছরের আকামা করে দেওয়ার পরে পরিশোধ করবে মর্মে সুজনের স্ত্রী তাছলিমা অঙ্গীকার করে ।
এ ব্যাপারে সজীবের পিতা মজিবর বলেন অনেক শালিস দরবারের পর দারোগা মাসুদের মাধ্যমে আমাদের একটি আকামার কাগজ দেয়। কিন্তু আমরা সেটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখতে পাই সেটি জাল বা নকল।
তাছাড়া ঐসময়ে (২০২০ সাল) সজীব ও সুজন বাংলাদেশেই ছিলো।
সুজনের স্ত্রী তাছলিমা বলেন আমার স্বামী সুজন ও অন্যভুক্তভোগী সজীব বাবুলের কাছ থেকে প্রায় দুই হাজার কিঃমিঃ দুরে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বাবুল আমার স্বামী সুজনকে ফোনে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হুমকি ধামকি দিচ্ছে নিয়মিত, যাতে এগুলো নিয়ে কারো কাছে না যাই বা আর কোন মামলা না করি বা পুলিশকে না জানাই।
এ প্রসঙ্গে কুদ্দুস ফকির বলেন আমার সকল কাগজপত্র পুলিশে কাছে দেওয়া আছে।