সালথায় মুজিববর্ষের ঘরে দুষ্কৃতিকারীদের হানা: বারান্দার সামনের অংশ পূর্ণ নির্মাণ
সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী (মুজিববর্ষ) উপলক্ষে ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় ২য় পর্যায়ে ২৩৩ টি ঘর নির্মান করা হচ্ছে। যার মধ্যে বেশ কিছু ঘর নির্মান শেষে হস্তান্তরও করা হয়েছে এবং কিছু ঘর নির্মানাধীন রয়েছে। গৃহহীনদের এসব ঘর নির্মানে গুনগত সঠিক মান নিশ্চিত করার লক্ষে সর্বদাই মনিটরিং করছেন উপজেলা প্রশাসন সহ বাস্তবায়ন টাস্কফোর্স কমিটি।
গত ১লা জুন নির্মানাধীন একটি ঘরের দেওয়াল কিছুটা হেলে পরলে খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ তাছলিমা আকতার। বিস্তারিত দেখে উপজেলা প্রোকৌশলী তৌওহীদুর রহমানকে সাথে নিয়ে সাথে নিয়ে মিস্ত্রী দিয়ে হেলা পড়া অংশ ভেঙ্গে পুনরায় নির্মানের নির্দেশ দেন। নির্মান শেষ হলে তিনি পুনরায় আবার স্বরেজমিনে প্রতিবারের ন্যায় কাজের অগ্রগতি দেখতে যান।
এসময় সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ তাছলিমা আকতার সাংবাদিকদের বলেন, গত ১জুন রাত ৮টা ২০ মিনিটে খবর পাই যে মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কুমারপট্টিতে নির্মানাধীন একটি ঘরের বারান্দার সামনে অংশটুকুর মাঝামাঝি পিলারের কাছে গর্তের কারনে দুর্বল হয়ে কিছুটা হেলে গেছে। খবরটি পেয়ে রাতেই আমি পরিদর্শন করি। সেখানে গিয়ে দেখি ঘরের বারান্দার ডোয়ার নিচ দিয়ে কে বা কাহারা গর্ত করে রাখে। এমনভাবে গর্তটি করেছে যে সামান্য একটু পানির চাপ পাওয়ায় বারান্দার নির্মাণাধীন অসম্পূর্ণ ডোয়া (দেয়াল) ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
এরপর রাত ৮টা ৪৩ মিনিটের দিকে বিষয়টি নিয়ে সালথা উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ তৌহিদুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করি এবং পরদিন ০২ জুন সকালে মিস্ত্রীদের মাধ্যমে উক্ত ক্ষতিগ্রস্থ অংশ ভেঙ্গে নতুন করে নির্মান করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। মাটি ভেজা থাকায় শুকানোর জন্য ৭দিন পর আজ বারান্দার সামনের অংশটুকু পুনরায় কাজ করানো হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক আর কৃত্রিম গর্ত করা দেখলেই বোঝা যায়, এটা দেখেই মনে হয়েছে কৃত্রিম গর্ত। ধারনা করা যাচ্ছে উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে রাতের আধাঁরে দুষ্কৃতিকারীরা ঘরটি ক্ষতিগ্রস্থ করতেই গর্তটি করে রেখেছিলো। ড্রেজার দিয়ে বারান্দায় বালু ফেলা হয়নি, ঘরের ভেতরে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তাদের সাথে আলোচনা করে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কুমারপট্টি গ্রামে নির্মানাধীন সরকারি ঘরের সামনে থেকে এর আগে দুটি মোটর চুরি হয়েছে, পরবর্তীতে চোরদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নিম্ন মানের মালামাল ব্যবহারের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়েছে কিছু দুষ্কৃতিকারী, উল্লেখিত সংবাদটির তথ্যগুলো মোটেও সত্য নয়। এই বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রকৌশলীর মতামত নিতে পারতেন, বা অন্য কোন অভিজ্ঞ ব্যাক্তিদের মতামত নিতে পারতেন।
নিম্নমানের সামগ্রীর অভিযোগ প্রসঙ্গে সালথা উপজেলা প্রকৌশলী মো: তৌহিদুর রহমান বলেন, এখানে রড ও সিমেন্ট ল্যাবে পরীক্ষা করে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইটের গুনগত মানও যথেষ্ট ভালো রয়েছে, যেটা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। এখানে যে বালু ব্যবহার করা হচ্ছে তাতেও কোনো প্রকার মাটি যুক্ত নেই। যে নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করা হয়ে তা অবশ্যই সঠিক ও গুনগত মানের।
ঘরের দেওয়াল (ডোয়া) পুনরায় নির্মাণ করার পর মঙ্গলবার বিকালে পরিদর্শনে যান সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ তাছলিমা আকতার। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুপা বেগম, উপজেলা প্রকৌশলী মো: তৌহিদুর রহমান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পরিতোষ বাড়ৈ, মাঝারদিয়া ইউপি সচিব ইকবাল হোসেন প্রমূখ।