রনকাইল ফকিরের হাঁটে জমজমাট হয়ে উঠেছে পেঁয়াজ কেনাবেচা-খুশি স্থানীয়রা
1 min readইনামুল হাসান মাসুমঃ
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মুখে হাসি ফুটাতে ভোরের আলোর সাথে পাল্লা দিয়ে মুখ উঁচিয়ে দাড়িয়ে উঠছে ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল ফকিরের হাট নামের বাজারটি। এই হাঁট ইজারাভুক্ত হয়েও দীর্ঘদিন যাবৎ অবহেলায় থাকলেও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেনের উদ্যোগে নব রুপে জেগে উঠছে। বাজারের জেগে উঠার অন্যতম কারন হয়ে দাড়াচ্ছে পেঁয়াজ বিক্রি, এতে খুশি স্থানীয় জনগণসহ ক্রেতা-বিক্রেতারা।
বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল) সকালে ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে হাটবারের শুভ উদ্বোধন করেন চেয়ারম্যান ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেন। এ সময় এলাকাবাসীসহ বাজারের ব্যবসায়ীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহে প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার এ দু’দিন হাট বসবে বাজারে। এ বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো পেঁয়াজের হাঁট বসে। এ সময় এলাকাবাসীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপণাও দেখা গিয়েছে। কি নেই বাজারে। নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে আছে সকল ধরনের পণ্য। প্রথম হাটেই দেখা যায়, পেঁয়াজ কেনা-বেচার ধুম। নসিমন, ইজি বাইক, সবাইকে ও ভ্যান গাড়ি ভরে বাজারের দিকে ছুটে আসছে কৃষকেরা। বাজারে অপেক্ষা করছে বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা। বাজারে পৌছানোর সাথেই শুরু হয় দর কষাকষি। পেয়াজের বর্তমান বাজার কম হলেও হয়ে যায় বিক্রি। বাজারদর কম হলেও বাড়ির নিকটে বাজার পেয়ে খুশি বিক্রেতারা।
এছাড়া বাজারে মাছ ব্যবসায়ীরাও নিয়ে এসেছে মাছ, সেখানেও বেচাকেনার ধুম। আছে কাঁচাবাজার ও সবজি বেচাকেনা। কমতি নেই কোনো কিছুরই। বাজারে এসেছে পেঁয়াজের মাচা তৈরি করার জন্য বাশ দ্বারা তৈরি বানা। কামারও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে দা-বঠি তৈরিতে। উদ্বোধনী হাটেই কমতি নেই কোনো কিছুরই। বাজারের ব্যবসায়ীদের মুখেও ফুটে উঠেছে হাসি।
এ বাজারের প্রবেশদ্বার রয়েছে ত্রি-মুখী। কানাইপুর বাজার থেকে কয়েক কিলোমিটার ভেতরে এবং চৌরঙ্গীর মোড় থেকেও পাকা রাস্তা ধরে একটু ভেতরের দিকে বাজারটি অবস্থিত। সবদিকেই রয়েছে পাঁকা রাস্তা। বাজারের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতমানের হওয়ায় বাজারটিও উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে বলে স্থানীয়দের ধারনা।
এছাড়া বাজারটির পাশে নির্মান করা হচ্ছে নতুন মসজিদ, পাশেই প্রস্তাবিত রয়েছে ব্যপক জায়গা নিয়ে গরুর হাঁট। স্থানীয়রা বলেন, এই বাজার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে উপকারে আসবে। সেই দূরের পথে কানাইপুর যেতে হয় নিত্যপণ্য কেনাবেচার চাহিদা মেটাতে। বাড়ির পাশে হওয়ায় আমাদের ভালো লাগছে।
এ বিষয়ে কানাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেন বলেন, জাকজমকভাবেই রনকাইল ফকিরের হাঁট শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বাজারের কেনাবেচা। এই বাজারটি ছাড়া কানাইপুর এবং সালথা বাজারের মধ্যেখানে বড় কোনো বাজার নেই। তৎকালীন সময়ে আমার বাবা মোঃ তমিজদ্দীন ফকির এলাকাবাসীর সুবিধার্থে ফ্রি-তে এই বাজারের জমি দান করেন, যেকারনে এলাকাবাসী বাজারের নামকরণ করেছে ফকিরের হাঁট। এই হাঁটে তেমন কোনো খাজনা নেওয়া হয়না। ব্যবসায়ীরাও স্বাচ্ছন্দবোধ করছে। কৃষকেরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে পেঁয়াজও বিক্রি করতে পারছে। সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় বাজারটি দিনে দিনে অনেক বড় হবে।
এলাকাবাসী জানায়, এই বাজারের জায়গা চেয়ারম্যানদেরই। চেয়ারম্যানের উদ্যোগেই আবার জেগে উঠছে বাজারটি। আমাদের পেঁয়াজ বিক্রি করার জন্য সেই কানাইপুর যেতে হতো, বেশ গাড়ী ভাড়া লাগতো। এখন আর যাওয়া লাগবে না। এখান থেকেই আমরা আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বাজার সদাই করতে পারবো।