প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সালথা থানা ওসির সংবাদ সম্মেলন
1 min readসালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
গত ২৩শে মার্চ বেশ কয়েকটি অনলাইন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় “চাঁদা না পাওয়ায় ঘুমন্ত জিহাদকে তুলে এনে বেধরক পেটানোর অভিযোগে সালথা থানা ওসির বিরুদ্ধে মানববন্ধন” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে প্রতিবাদ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসিকুজ্জামান। রবিবার বিকাল ৪টায় সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করে সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসিকুজ্জামান বলেন, ১৩ মার্চ দলপক্ষ নিয়ে সালথা থানা এলাকার গট্টি ইউনিয়নের বাসুয়ারকান্দী গ্রামে ধলা মিয়ার দল ও ইকবাল শেখের দলের মধ্যে মারামারি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এঘটনায় কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। সংঘর্ষের পরিস্থিতি শান্ত হলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে আসে। এই ঘটনার জেরে গট্টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দলপক্ষের মধ্যে বিরোধ ছড়িয়ে পড়ে।
ওই দিন রাত ২ টার দিকে পুনরায় খবর আসে বালিয়া বাজার এলাকায় দুইটি দলের লোকজন অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হচ্ছে। এমন খবরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাতেই পুলিশফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দলবদ্ধ লোকজনকে ছত্রভঙ্গ হওয়ার নির্দেশ দেই। উপস্থিত দুইপক্ষের লোকজন পুলিশী নির্দেশ অমান্য করে পুলিশের উপর বেপরোয়াভাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তাদের আক্রমনে আমিসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হই। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ঘটনায় জড়িত আক্কাছ শেখ, মজনু ফকির, জিহাদ মোল্যা ও সজিব মিয়াকে দেশীয় অস্ত্র ঢাল-কাতরা সহ গ্রেপ্তার করা হয়। জিহাদ মোল্যার দেওয়া তথ্য মতে অলিদ ফকিরের বাড়ি থেকে ঢাল কাতরাসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
পরে ওই রাতেই মুরাদ মেম্বার ও গট্টি ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলু থানায় আসে মুরাদ এর ভাই জিহাদকে ছাড়াতে। আমি তাকে ছাড়তে নারাজ হই। এতেই মুরাদ মেম্বার আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। জিহাদকে গ্রেফতার করে থানা গারদে রাখা হয়। তাকে কোন মারধর করা হয়নি। পরের দিন তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়। বিজ্ঞ আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরন করেন। জিহাদ জামিনে মুক্তি পেয়ে তার ভাই মুরাদকে নিয়ে যে মানববন্ধন করেছে তা আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রনোদিত। তাছাড়া মুরাদ মেম্বার একজন গ্রাম্য দলের নেতৃত্ব দানকারী বিভিন্ন অনৈতিক সুপারিস নিয়ে আসতো থানায়। তার এই অনৈতিক সুপারিস না রাখার কারনে এমনটি করছে তিনি। তিনি আরো বলেন, মুরাদ মেম্বারের বিরুদ্ধে সালথা থানায় ৪টি ও তার ভাই জিহাদের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মুরাদ মেম্বার ও গট্টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলু থানা হেফাজতে থাকা জিহাদের সাথে দেখা করলে তাদের নিকট জিহাদ মারপিট ও চাঁদা দাবির কোন অভিযোগ করেন নাই, তাছাড়া ঐদিনই জিহাদকে বিজ্ঞ আদালদে প্রেরণ করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ বিধি মোতাবেক জিহাদের দেহ তল্লাশী শেষে গারদে বুঝে নেয়, সেখানে জিহাদকে মারপিট করা হয়েছে মর্মে কোন অভিযোগ করেন নাই। বিজ্ঞ আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরন করে।
মুরাদ মোল্যা তার ভাইকে থতানা হেফাজত থেকে ছাড়াতে না পেরে দীর্ঘ দিন পূর্বে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত ভাঙ্গা পা প্রদর্শন করে সহানুভূতি সৃষ্টি করে আসামী জিহাদ মোল্যাকে মারপিট করে টাকা দাবি করার মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। যা আসামীদের বিরুদ্ধে থাকা একাধীক তদন্তাধীন মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ ও সুষ্ঠ নিরপেক্ষ তদন্তে বাধাগ্রস্থ করছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে মুরাদ মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সালথা থানা পুালশের অপারেশন অফিসার এসআই গোলাম মোন্তাসিরমারুফ, সালথা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি আজিজুর রহমান ( আজিজ), ক্লাবের সহসভাপতি এমকিউ হোসাইন বুলবুল, মনির মোল্লা, সিনিয়র সাংবাদিক আবু নাছির হুসাইন, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, মজিবুর রহমান, সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, বিধান মন্ডল, আকাশ সাহা,শরিফুল হাসান প্রমূখ।